উপকারিতা
স্বাস্থ্যকর খাবার হিসাবে ছোলা বা বুটের বেশ সুনাম। এটা মুখরোচকও বটে। শক্তি দেয়। পেটেও থাকে বেশিক্ষণ। সাধারণত দুই প্রকারের ছোলা পাওয়া যায়: দেশী ছোলা ও কাবুলী ছোলা। দেশী ছোলা আকারে ছোট, একটু কালচে রংয়ের এবং অপেক্ষাকৃত শক্ত। কাবুলী ছোলা একটু বড় আকারের, উজ্জ্বলতর রং এবং দেশী ছোলার চেয়ে নরম। দেশী ছোলা এই উপমহাদেশে পাওয়া যায়। কাবুলী ছোলা জন্মায় আফগানিস্তান, দক্ষিণ ইউরোপ- এসব স্থানে।
ছোলা অত্যন্ত পুষ্টিকর। এটি আমিষের একটি উল্লেখযোগ্য উৎস। ছোলায় আমিষের পরিমাণ মাংসবা মাছের আমিষের পরিমাণের প্রায় সমান। তাই খাদ্য তালিকায় ছোলা থাকলে মাছ মাংস পরিমানে কম থাকলেও চলে। আমাদের দেশের মত উন্নয়নশীল দেশে ছোলাকে মাছ বা মাংসের বিকল্প হিসাবেও ভাবা যেতে পারে। ছোলার ডাল, তরকারিতে ছোলা, সেদ্ধ ছোলা ভাজি, ছোলার বেসন- নানান উপায়ে ছোলা খাওয়া যায়। ছোলার উপকারিতা-
হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে : অস্ট্রেলিয়ান গবেষকরা দেখিয়েছেন যে খাবারে ছোলা যুক্ত করলে টোটাল কোলেস্টেরল এবং খারাপ কোলেস্টেরল এর পরিমাণ কমে যায়। ছোলাতে দ্রবণীয় এবং অদ্রবণীয় উভয় ধরনের খাদ্য আঁশ আছে যা হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে : আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখানো হয় যে যে সকল অল্পবয়সী নারীরা বেশি পরিমাণে ফলিক এসিডযুক্ত খাবার খান তাদের হাইপারটেনশন এর প্রবণতা কমে যায়। যেহেতু ছোলায় বেশ ভাল পরিমাণ ফলিক এসিড থাকে সেহেতু ছোলা খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়। এছাড়া ছোলা বয়সসন্ধি পরবর্তীকালে মেয়েদের হার্টভাল রাখতেও সাহায্য করে।
ক্যান্সার রোধে সাহায্য করে : কোরিয়ান গবেষকরা তাদের গবেষণায় প্রমাণ করেছেন যে বেশি পরিমাণ ফলিক এসিড খাবারের সাথে গ্রহণের মাধ্যমে নারীরা কোলন ক্যান্সার এবং রেক্টাল ক্যান্সার এর ঝুঁকি থেকে নিজিদেরকে মুক্ত রাখতে পারেন। এছাড়া ফলিক এসিড রক্তের অ্যালার্জির পরিমাণ কমিয়ে এ্যজমার প্রকোপও কমিয়ে দেয়।আর তা্ই নিয়মিত ছোলা খান এবং সুস্হ থাকুন।
ডায়াবেটিসে উপকারী : ১০০ গ্রাম ছোলায় আছে: প্রায় ১৭ গ্রাম আমিষ বা প্রোটিন, ৬৪ গ্রাম শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট এবং ৫ গ্রাম ফ্যাট বা তেল। ছোলার শর্করা বা কার্বোহাইডেটের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম। তাই ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য ছোলার শর্করা ভাল।
রক্তের চর্বি কমাতে সাহায্য করে : ছোলার ফ্যাটের বেশিরভাগই পলি আনস্যাচুয়েটেড। এই ফ্যাট শরীরের জন্য মোটেই ক্ষতিকর নয়, বরং রক্তের চর্বি কমায়।
অস্থির ভাব দূর করে : ছোলায় শর্করার গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের পরিমাণ কম থাকায় শরীরে প্রবেশ করার পর অস্থির ভাব দূর হয়।
রোগ প্রতিরোধ করে : কাঁচা ছোলা ভিজিয়ে কাঁচা আদার সঙ্গে খেলে শরীরে আমিষ ও অ্যান্টিবায়োটিকের চাহিদা পূরণ হয়। আমিষ মানুষকে শক্তিশালী ও স্বাস্থ্যবান বানায় এবং অ্যান্টিবায়োটিক যে কোনো অসুখের জন্য প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
মেরুদণ্ডের ব্যথা দূর করে : এছাড়াও এতে ভিটামিন ‘বি’ও আছে পর্যাপ্ত পরিমাণে। ভিটামিন ‘বি’ মেরুদণ্ডের ব্যথা, স্নায়ুর দুর্বলতা কমায়। ছোলা অত্যন্ত পুষ্টিকর। এটি আমিষের একটি উল্লেখযোগ্য উৎস। এতে আমিষ মাংস বা মাছের পরিমাণের প্রায় সমান। তাই খাদ্যতালিকায় ছোলা থাকলে মাছ মাংসের প্রয়োজন পরে না। ত্বকে আনে মসৃণতা। কাঁচা ছোলা ভীষণ উপকারী।
এ ছাড়া যাঁরা ওজন কমাতে চান, তাঁদের ছোলা, টক দই, সবজি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকের ডায়েটেশিয়ানরা। কেননা ছোলার আঁশ শরীরে ওজন কমাতে সাহায্য করে।